বাউলুরি

এক অপ্রকৃতস্থ চুম্বন, তাঁকে দৃশ্যমান করে তুলেছিল

পাবলিক রিলেশানসের লাস্যময়ী আরিফা ম্যাডামের অধরোষ্ঠে আচমকা চুমু খায় রাজীব। দেশী নয়, একেবারে ফরাসী চুম্বন। আরিফা ম্যাডামের সাথে ইতিপূর্বে রাজীবের কোন আলাপ পরিচয় নেই । ঘটনার আকস্মিকতায় আরিফা ম্যাডাম প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। বিহ্ববলতা কাটতেই, চিৎকার করে উঠে। হেড অফিসের কতিপয় ফাজিল পুরুষজনেরা বলে, সেটি ঠিক চিৎকার ছিল না; অনেকটা চিৎকারের সহিত শীৎকারের মিশেল। খবরটি প্রকাশিত হলে, হেড অফিসে হুলুস্থূল ছড়িয়ে পড়ে। সবাই চুম্বন-বৃত্তান্ত কান পেতে শুনে। অচিরেই জানাজানি হয়, যে ব্যক্তিটি, বলা নেই , কওয়া নেই , হঠাৎ আরিফা ম্যাডামকে চুমু খেলো, সে কোম্পানীর একজন সাময়িক বরখাস্ত বিক্রয় প্রতিনিধি। অতি সাধারণ! প্রতীয়মান হতে পারে, চুম্বনকারী অতি সাধারণ না হয়ে, কোম্পানীর বৃদ্ধ চেয়ারম্যান হলে, বিষয়টি সমীচীন হতো। সারা অফিসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে কক্ষে, খুপরিতে খুপরিতে ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। গুটিকয় দুষ্ট অফিসার, অফিস বিল্ডিং-এর কোনায় দাঁড়িয়ে সিগারেটে টান দিতে দিতে, আরিফা ম্যাডামের আবেদনময় পোষাক নিয়ে , আরিফা ম্যাডামের সাথে সেলস ডিরেক্টর ইকরাম উল্লাহর ঢলাঢলি নিয়ে, ইংগিতপূর্ণ আলোচনা করে। আলোচনায় রাজীব নামের বরখাস্ত বিক্রিয় প্রতিনিধির আত্মনিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতার ভাগ আরিফা ম্যাডামকেও দেয়া হয়।

বৃষ্টি ফুটবল

নাম তাঁর সোনিয়া। মা-বাবার দেয়া নয়, নিজেরই দেয়া। অনেক পরে আবিষ্কার করেছিলাম, দস্তয়ভস্কির ক্রাইম এন্ড পানিসম্যান্টের চরিত্র, পতিতা সোনিয়ার নামটিই সে বেছে নিয়েছিল। আমার সাথে তাঁর যেটুকু যোগাযোগ, তাতে সোনিয়া ভিন্ন অন্য কোন নামের প্রয়োজন নেই। কৌতুহলে একবার পুরো নাম জানতে চেয়েছিলাম। উত্তর ছিল, ভোঁতা এবং কৌতুক বিবর্জিত। – সোনিয়া সেমিওনোভা মারমেলাডভ। দস্তয়ভস্কির সোনিয়ার পতিতাবৃত্তি ছিল, মাতাল পিতার সংসার চালানোর জন্য। কিন্তু এই সোনিয়ার ব্যাপারটি তেমন ছিলো না। সে বেশ সচ্ছ্বল পরিবার থেকে এসেছে। দস্তয়ভস্কির সোনিয়া আর তাঁর মাঝে একটাই মিল, তা হলো, তাঁরা দু'জনেই বিছানায় যেতো সঙ্গী পুরুষটিকে ভালো না বেসেই। সম্ভবত: অন্য যে ক'জন ছেলেবন্ধু, যাদের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল, সবার কাছেই সোনিয়া কেবল সোনিয়াই। সোনিয়া সম্পর্কে আমি যে টুকু জানি, তা খণ্ড চিত্র। অথবা খন্ড খন্ড চিত্রের কোলাজ। সোনিয়ার একবার বিয়ে হয়েছিল। ভূতপূর্ব স্বামী পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। দু'হাতে ঘুষ খেতো। ঘুষের টাকা রিয়েল এস্টেটে ইনভেস্ট করে আরো ফাঁপিয়ে নিয়েছিলো। সোনিয়া চাইলে, অর্থের ভাবনাহীন একটা জীবন বেছে নিতে পারতো। কিন্তু সোনিয়া সেই জীবনটি বেছে নেয় নি। এই জীবনটি বেছে নিয়েছিল । সোনিয়ার ভাষায়, সে সুখী।